শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

জঘন্যতম শত্রু মোকাবেলায় বিজ্ঞান

আশরাফ উদ্দিন আহমেদ   |   বৃহস্পতিবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২

জঘন্যতম শত্রু মোকাবেলায় বিজ্ঞান

এই আধুনিক যুগে বিভীষিকার মত উদয় হয়েছে করোনা-১৯ ভাইরাস । কোথা থেকে, কি ভাবে এর উদয় ও সংক্রমণ তা নিশ্চিত ভাবে কেও জানেনা যদিও মতামতের অভাব নেই । বিরাট দেশ চীনের স্যাঁতস্যাঁতে হাজারো গুহায় বাঁদুরের মাধ্যমে অন্য প্রাণীর শরীর থেকে কোনভাবে মনুষ্যের শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমণ শুরু হয়েহে বলে কেউ কেউ বলেন। আবার চীনের যে সমস্ত কাঁদা ভেজা বাজারে পশু পাখী বিক্রি হয় সেখান থেকে ভাইরাসটির উৎপত্তি এ কথা ও বহুল প্রচারিত। চীনের হুয়াহং ভাইরোলজি ইন্সটিটিউট থেকে অসাবধানাতাবশত সেখানে কর্মরত কাউকে সংক্রমিত করেছে এরকম কথা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেকবার বলেছে। তিনি চীনা ভাইরাস নামে কোভিড-১৯ নিয়ে বিদ্রুপ করতেন। তবে তাকে ক্রেডিট দিতে হয় এজন্য যে নান ধরনের ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ সত্ত্বে ও বিজ্ঞান সংস্থাগুলোকে তাগাদা দিয়েছে নিরন্তর ভাবে প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কারের জন্য।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে পহেলা ফেব্রুয়ারী ২০২২ পর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হল ৩৭৬,৪৭৮,৩৩৫ জন; মৃত্যু হয়েছে ৫,৬৬৬,০৬৪ জনের । এ পর্যন্ত ৯,৯০১,১৩৫,৯৮০ জন ভ্যাক্সিন নিয়েছে । ইতোমধ্যেই বেশ কয়টি ভেরিয়েন্ট ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছে যে কারণে পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না তবে অগ্রগতি প্রতিদিনই হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনা-১৯ ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তাদের প্রচেষ্টা তুলে ধরার জন্যই এ নিবন্ধ। ইন্টারনেট, টাইম ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন সোর্স থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের সাহায্য নিয়ে লেখাটি বাংলা ভাষা-ভাষী পাঠকদের ভাল লাগলেই শ্রম সার্থক হবে বলে মনে করব ।


উয়াহাং হাসপাতালের করোনা আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে চীনা বিজ্ঞানীরা দায়ী করোনা ভাইরাসের জেনোমের তিরিশ হাজার নিউক্লিউটাইডস (nucleotides) পৃথক করে সনাক্ত করতে সমর্থ হন। এতে পরবর্তী গগেসনা অনেক সহজ হয়ে পড়ে ।

বিজ্ঞানী কাটালিন (Katalin kariko), ড্রু ওয়েজমেন (Drew Weissman), কিজেমেকিয়া করবেট (Kizzmekia Corbett), এবং বার্নি গ্রাহাম (Barney Graham)। অতি আলোকোজ্জ্বল পরিষ্কার ভাবে আলোকিত ল্যাব কক্ষগুলোকে প্রকার ভাসমান আঁশ মুক্ত করে কাজ শুরু করে অচিরেই তাঁরা চমৎকার ফল পান। দিনরাত কাজ করে এ চার বিজ্ঞানী ভাইরাসের বেঁচে থাকার গুঢ় রহস্য, যে প্রক্রিয়ার বংশ বৃদ্ধি করে এ সব জানাটা সহজ ছিল না । চার বিজ্ঞানী ভাইরাসের আভ্যন্তরীণ রহস্য জগতে হানা দিয়ে সাফল্য পাওয়ার পর এদের মানব দেহে আক্রমণ প্রতিহত করতে অনেকাংশেই সফলতার মুখ দেখে।


বায়োকেমিস্ট্রিতে পিএইচডি করা কাটালিনের জন্ম হাঙ্গেরিতে। সেখানেই বায়োলজিতে স্নাতক ও পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করে ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেম্পল ইউনিভার্সিটি এবং পরবিতে ১৯৮৯ সালে ইউনিভার্সিটি অব পেনসালভেনিয়াতে গবেষক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
সেখানেই তার যোগাযোগ হয় ইমিনোলজিস্ট ও ডাক্তার ওয়েজমেনের সাথে। দীর্ঘদিন পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে ২০০০ সালে তাঁরা এমন ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সমর্থ হন যা নরোভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, এইচ আই ভি, হেপাটাইসিস এবং জিকা প্রতিরোধে সফল হয়। ২০০৫ সালে তাঁরা তাদের আবিষ্কারের বিস্তারিত বিবরণ Immunity জার্নালে পাঠান। তবে কেউ কোন গুরুত্ব দেয়নি। ১৫ বছর অপেক্ষার পর বিশ্বে SARS-CoV-2 ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হলে বিজ্ঞানীরা কারিকো এবং ওয়েইজম্যান এর আবিষ্কারের গুরুত্ব অনুধাবন করতে সমর্থ হন । অবশ্য এরই মধ্যে বেশ কজন বিজ্ঞানী তাদের ফরমুলায় (mRNA based) বিভিন্ন কোম্পানির ল্যাবে ভ্যাক্সিন তৈরি করতে কৃতকার্য হন ।

বার্নী গ্রাহামকে ১৯৯৭ সালে আন্থনী ফ্যসি সে সময়ে নতুন প্রতিষ্ঠিত ভ্যাক্সিন রিসার্চ সেন্টারে ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ দান করেন। কোভিড-১৯ যখন হানা দেয় সে সময়টাতে এক ধরনের বিশেষ সর্দির ভ্যাকসিন তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিনের গবেষণায় গ্রাহাম তার সহকর্মী structure-based design তৈরি করতে সমর্থ হন যা থেকে উপ্সঙ্ঘারে আসেন যে সকল প্রকার ভাইরাসই একটি নির্দিষ্ট কাঠামো বিন্যাসে চলে । ২০১৪ থেকে গ্রাহামের টীম মডারনা বায়োটেক কোম্পানির সাথে গবেষণা কাজে যুক্ত হয় । ২০১৯ সালের জুলাই মাসে গ্রাহাম ও তার টীম মডারনার সজঘঅ ফ্লাটফরমে শোহশোঢীট জঝঠ প্রোটিন যোগ করলে মানব দেহে সংক্রমণ ক্ষমতা দশগুণ বাড়ায় । মাইক্রোবায়োলজি এবং ইমনোলজিতে পি এইচ ডি ডিগ্রি প্রাপ্ত কিজমেকিয়া করবারট গ্রাহামের টীমে যোগ দিলে তিনি এবং তাঁর টীম প্রোটিন বেঁড়ে যাওয়া কাঠামো ও এর প্রক্রিয়া আবিষ্কার করতে সমর্থ হন ।


এর ফলে টীমটি spike protein বানাতে সক্ষম হন । পরবর্তীতে SARS-Co-V-2 র সিকুয়েন্স পেলে তাঁরা খুব তাড়াতাড়ি ৯০% কাজ করে এমন ভ্যাকসিন তৈরিতে ফাইজার- বায়োএনটেক, মডারনা, জনসন অ্যান্ড জনসন-জেন্সন সেনপি, এবং নভাভেক্স ইত্যাদি কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পিত উপায়ে বাজারজাত করতে সমর্থ হয়। বিজ্ঞান যে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে তা মানুষ অনেক সময়ই বিশ্বাস করতে চায় না ।

আমেরিকার ৩০% মানুষ চাঁদে অবতরণ ঘটনা বিশ্বাস করেনি। করোনা-১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করবে এমন প্রতিষেধক টিকা বা ভ্যাকসিনে মানুষ বিশ্বাস করেনি বেশ কিছু দিন; খোদ আমেরিকাতে এখনো প্রায় ৩০% মানুষ ভ্যাক্সিনে বিশ্বাস করেনা নানাবিদ অজুহাতে । বিজ্ঞান এবং ধর্মে খুবই ক্ষীণ সংঘর্ষ থাকলে ও এ আধুনিক যুগে ও একশ্রেণীর মানুষ বিজ্ঞানকে বিশ্বাসে আনতে নারাজ। এ কাতারে ছিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। অবশ্য পরবর্তীতে তিনি ও ভ্যাকসিন নিয়েছেন।

advertisement

Posted ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(6246 বার পঠিত)

স্মরণে যাতনা
স্মরণে যাতনা

(1303 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(1149 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.