আশরাফ উদ্দিন আহমেদ | বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
(চতুর্থ অংশ) : আন্তর্জাতিক মহিলা ক্ষমতায়ন দিবস গত ৮ মার্চ পার হয়ে গেলো। এ দিনটির থিম নিয়ে সাধারণত কিছু একটা লেখা প্রকাশ করা দীর্ঘদিনের অভ্যেস। এবার হয়ে ওঠেনি। মনে হলো মহিলাদের ক্ষমতায়ন পুরো মার্চ মাস জুডে উদযাপিত হয় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অষ্ট্রেলিয়ার। আজ ২৯ শে মার্চ, ২০২৩। নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত যে সাপ্তাহিক পত্রিকায় আমি লেখা পাঠাই সেটি বাজারে আসে বৃহস্পতিবার দিন। সংবাদপত্রটি বুধবার দুপুর অব্দি আমার লেখা গ্রহনের স্বাধীনতা দিয়েছে।
“DigitAll : Innovation and technology for gender equality’’ হলো এবারের দিবস/মাস পালনের নির্ধারিত থিম। এ ধারণার সাথে বিজ্ঞানের অভাবিত অগ্রগতির কারণে মহিলাদের রান্নাঘরে প্রতিদিন সময় ক্ষেপণের যে নিত্য নৈমিত্তিক কাজ তা থেকে তারা অনেকাংশেই রেহাই পেয়েছেন। দাম্পত্য সম্পর্কের পরিবর্তিত চিত্র এতে কিছুটা হলেও পাল্টেছে। মহিলারা এখন অন্য সব কাজ, বিশেষত সংসারের আর্থিক স্বচ্ছলতা সুগম করার কাজে সময় দিতে পারেন। সাথে সাথে বাচ্চাদের ডে-কেয়ার, স্কুলিং, গৃহ পরিচর্যা, সাপ্তাহিক বিনোদন সহ গ্রীষ্মের ছুটি কাটানো ইত্যাদি কাজে ও মনোনিবেশ করতে পারেন।
পাশ্চাত্য সমাজে স্বামী-স্ত্রী বা দম্পতি দুজনেই বাইরে কাজ করে পরিবারের জন্য অর্থ উপার্জনের পথ সুগম করলে ও দাম্পত্য সুখ যেন পালিয়ে যায়। সুখী দাম্পত্য জীবনের পরিপন্হী বেশ কিছু মূল্যবোধ মানসিক ও সামাজিক ভাবে আমাদের আচ্ছন্ন করছে নিশ্চিতভাবেই। দুপক্ষই জীবন উপভোগ ও বিনোদনের নিরবিচ্ছিন্ন স্বাধীনতা চায়। মহিলারা সেকেন্ড সেক্স জীবন পরিহার করে স্বাবলম্বী, স্বাধীন হয়ে থাকতে চান। স্বামী বা পার্টনারের উপর আর্থিক ভাবে নির্ভরশীল হলে এ রকম জীবনযাপন সম্ভব নয়।
তাই মহিলারা ঘরের বাইরে কাজ করতে চান। ক্ষমতায়নে ভারসাম্য অবস্হা কে বেশী উপার্জন করে বা কার টাকায় সংসার চলে এ বাস্তব অবস্হার উপর নির্ভরশীল এ কথা ধ্রুব সত্য।
একান্নবর্তী পরিবার মানসিকতা ও মূল্যবোধ সম্পন্ন দম্পতিরা যৌথভাবে পরিবারের দায়িত্ব পালন করতে তেমন অনীহা পোষণ করে না। প্রয়োজনে মা-বাবা এদের সন্তান প্রতিপালন, রান্না-বান্না, নাতী-নাতীনকে স্কুলে নেয়া আসা করে থাকেন। দাদা-দাদী, নানা-নানী এদের বাচ্চাদের স্কুলে প্রায়ই দেখা যায়। অরিয়েন্টাল সংস্কৃতি থেকে আসা পরিবারগুলোতে এ চিত্র অধিক হারে দেখা যায়।
বিবাহিতা মহিলারা বর্তমান সময়ে অনেকক্ষেত্রেই, যাকে বলে নারী স্বাধীনতা ভোগ করছেন, নিজের জীবনে ও পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ও আনতে পরিশ্রম করছেন প্রচুর। তার পরেও বলতে হয় দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর চেয়ে অধিকমাত্রায় চাকুরী এবং পারিবারিক বন্ধনের সীমারেখায় মানসিক চাপে থাকে।
সন্তান প্রতিপালন, বৃদ্ধ পিতা-মাতা, শ্বশুড়-শ্বাশুডীর সেবা-যত্ন করা এসব দায়িত্ব এ গৃহকর্তী হিসেবে স্ত্রী’র উপরেই বেশী বার্তায়। দাম্পত্য সুখ-শান্তি আনয়নে যে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে তাহলো, স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কিত নারী-পুরুষ সাংসারিক এবং অর্থ উপার্জনের সহ অনেক ক্ষেত্রেই যৌথ দায়িত্ব পালন করছে। ‘ শেয়ারিং এ্যান্ড কেয়ারিং ‘ মানসিকতা ও মূল্যবোধ দাম্পত্য জীবনে প্রেম ও প্রীতি বন্ধন দৃঢ়তর করতে সন্দেহাতীত ভাবে ভূমিকা রাখছে।
Posted ১:২৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh