আশরাফ উদ্দিন আহমেদ | বৃহস্পতিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
পরিবার সমাজবিজ্ঞানের অধিকাংশ পন্ডিত মনে করেন ইউরোপে ভিক্টোরিয়ান যুগ (১৮৩০) শুরু হওয়ার প্রারম্ভিক সময়ে সনাতন দাম্পত্য সম্পর্কের মুল্যবোধে পরিবর্তনের ধাক্কা অনুভূত হয় । নারী-পুরুষ সম্পর্কের আবরিত ক্ষেত্রে খোলামেলা বিচরণ শুরু হয় । বিয়ে-শাদী নারী-পুরুষের প্রেম-ভালোবাসা ও পছন্দ কার্টশীপের পরিণতিতে সম্পন্ন হওয়ার অলিখিত রেওয়াজ এ সময়ই শুরু হয় । এর সাথে ডি এইচ লরেন্স প্রণীত ‘ লেডি চ্যাটারলি’স লাভার’ গ্রন্থটির যোগসূত্র থাকতে পারি । ১৮২৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হলে এটি ইংল্যান্ডের রক্ষণশীল সমাজে দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করে। এমন নয় যে বিবাহিত নারীর যৌনাচার কোন বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছিলো ।
সব যুগেই তা ছিলো আড়ালে আবডালে ; রোমান সভ্যতা, ক্রীতদাস ব্যবস্হা যে সমস্ত সমাজে প্রচলিত ছিল সে সময়ে রোম, গ্রীস এমনসব সভ্যতার পাদপীঠে দস্তুরমত গৌরবের বিষয় ছিলো ।যে বিষয়টি সমাজে গ্রহণীয় ছিলো না তাহলো অভিজাত পরিবারের কোন বিবাহিত নারী শ্রমজীবী পুরুষের বা নিন্ম শ্রেণীর কারো সাথে সম্ভোগে লিপ্ত হবে । ডি এইচ লরেন্স এমন ঘটনার উন্মোচন করেন অত্যন্ত রসালো ও খোলামেলা ভাবে।
পরিবার ব্যবস্থায় যে ক’টি ঘটনা গভীর প্রভার ফেলেছে সেগুলোর মধ্যে শিল্প বিপ্লব, ইউরোপে রেঁনেসা, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, গ্রেট অর্থনৈতিক মন্দা , কো-এডুকেশন ইত্যাদি সমাজতাত্ত্বিক গুরুত্বের দিক থেকে প্রথম কাতারে । এগুলোর প্রভাবে নারী স্বাধীনতা ত্বরান্বিত হয় । সাথে ছোট-বড় সামাজিক বিপ্লব/নারী স্বাধীনতা আন্দোলন তো ছিলোই। বিশ্বায়নের প্রভাব এ ব্যাপারে দারুণ কাজ করেছে । শিক্ষা ব্যবস্হার বিভিন্ন স্হরে এখন নারী-পুরুষের অংশ গ্রহণে নারীরা আগুয়ান ।
মেয়েরা এখন আর ঘরে অন্তরীণ নেই । চাকুরী-বাকুরী, রাজনীতি, ব্যবসা ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই তারা সম্মানিত আসনে স্থান করে নিয়েছে । সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পেশায়, যুদ্ধক্ষেত্রে, নাসার মত স্পেশালাইজড প্রতিষ্ঠানে ও মহিলারা পুরুষদের পাশে সম্মান ও প্রতিযোগিতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
মাদারহুড, পরিবার এসব দায়িত্বপালন করে ও ঘরের বাইরের কাজগুলো ঠিকই করছে । তবে, পুরুষরা এখন ঘরের ও সংসারের কাজে সময় দিচ্ছে যা পরিবারে এ দু’শক্তির ভূমিকাকে ভিন্নতর করলে ও শক্তি হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে। নারীদের অবাধ স্বাধীনতা কিছুকিছু সমস্যা সৃষ্টি করে সত্য তবে আজীবন সাথী সম্পর্কটি মধুর এবং এতে উপকারই বেশী। অসুখ-বিসুখ, চাকুরী থেকে ছাঁটাই, বৃদ্ধাবস্থায় একে অন্যের যত্ন নেয়া এমনতরো অবস্থায় সঙ্গী যেমন যত্ন-আত্তি করে তা অন্য কোন সম্পর্কে চিন্তা ও করা যায় না। মানসিক প্রশান্তি এ রকম আজীবন বা পার্মানেন্ট সম্পর্কেই একমাত্র পাওয়া সম্ভব । (চলবে)
Posted ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh