আশরাফ উদ্দিন আহমেদ | বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২
তৃতীয় পর্ব : প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর শাসনের এক বছর পার হতে না হতেই দারুণ বিপাকের মধ্যে নিমজ্জিত । আভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক দু ফ্রন্টে প্রায় একই দশা । লড়াইয়ের দামামা বাজছে টু বাজছেই। তালিবানদের হাতে আফগানিস্তান ছেড়ে দিয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মান্ধ শক্তির পতন ঘটেনি ।
আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে তালিবানদের বি-টিম মাথাচাড়া দিয়ে ওঠছে। বাকু হারাম বা জামাত আহল সুন্নাহ দলটি উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়া ছাড়া ও শাদ, নাইজার, এবং উত্তর ক্যামেরনে খুবই সক্রিয় । তিউনিসিয়া, সোমালিয়া ও আশে-পাশের দেশগুলোতে ও আফগানিস্তানে তালিবানদের পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এদের মিত্র শক্তিগুলো তাদের আন্দোলন জোরদার করেছে । রাশিয়া-চীন মৈত্রী বন্ধন পূর্বেকার যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী ।
ইউক্রেন এবং তাইওয়ান নিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কূটনৈতিক অবস্থান এই দুটি বৃহৎ শক্তিকে আমেরিকার বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকা নিতে ইন্ধন যোগাচ্ছে নিত্যই । রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ যেমন কার্যকর হবে আশা করা গিয়েছিলো তেমনটি হয়নি । জ্বালানি তেলের অত্যধিক মূল্য বৃদ্ধি, বেবি ফুডের সঙ্কট, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অর্থনৈতিক বিপর্যস্ত অবস্থা, বিশেষত বাড়িভাড়া বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য সেবা খরচ বেড়ে যাওয়া, এবং উচ্চ শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি সাধারণ মানুষকে এ মিড-টার্ম ইলেকশনের বছরে জো বাইডেনের সমালোচনায় প্রলুব্দ করছে । তাঁর জনপ্রিয়তার গতি দারুণভাবে নিন্মমুখী ।
তাঁর দলের মধ্যে অন্তঃকলহ ও প্রকট আকার ধারণ করেছে । ভোটাধিকারের মত প্রশ্নে ও কৃশাঙ্গ নেতাদের অনেকেই তাঁর বক্তব্য ও উদ্যোগ প্রত্যাহার করতে দ্বিধা করেননি । দলের উদারপন্থী ও প্রগ্রেসিভ নেতাদের মধ্যে ও একই প্রবনতা লক্ষ্য করা গিয়েছে । অনেকে তাঁর বয়স ও শারীরিক জড়তাকে দায়ী করে বলেন যে ৭৯ বছর বয়সে তাঁর কাছ থেকে আর বেশী কিছু আশা করা যায়না । তবে, এখনো যে সাহসিকতা ও কুশল নিয়ে ইউক্রেন প্রশ্নে রাশিয়াকে মোকাবেলা করছেন তার প্রশংসা করতেই হয় । তাইওয়ান নিয়ে চীনকে ধমক দেয়ার সাহস দেখানোর জন্য ও তিনি সকল মহলেই নন্দিত হয়েছেন ।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও তাঁর সাগরেদদের হাজারো মিথ্যাচার ও ভ্রান্ত/ভুয়া তথ্যাদি এবং পাহাড় প্রমাণ কন্সপিরেচি থিওরি মোকাবেলা করে এগুতে হয়েছে । ২০২০ নির্বাচন, করোনা ভ্যাকসিন, নির্বাচনের ফলাফল বানচাল করার জন্য ওয়াশিংটন ডিসি গেরাওয়ের মত অপকর্ম, কোর্ট কাছারি ইত্তোকার অচিন্তনীয় হীন ধরনের বাধা-বিপত্তি পার হয়ে পথ চলতে হয়েছে ।
আজতক ও দুস্তর পথ ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই তাঁকে চলতে হচ্ছে । মিড-টার্ম নির্বাচনের প্রস্তুতিতে প্রাইমারি পর্বে ও প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প ও তাঁর দলের ষড়যন্ত্র ও প্রতিশোধ মূলক কর্মকাণ্ড চলতেই আছে । কোভিড-১৯ এর ছোবল শেষ হয়ে ও যেন শেষ হচ্ছেনা । সব মিলিয়ে জো বাইডেন ও তাঁর দলের সময় ভাল যাচ্ছে না । তাঁর পর ও ২০২২ মিড-টার্ম নির্বাচনে ডেমোক্রেট পার্টি ভালই করবে বলে আশা করা যায় । প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প একাই তাঁর দলকে ডুবানোর জন্য যথেষ্ট বলে ধারণা করা অমূলক হবেনা। প্রাইমারির ফলাফল ট্র্যাম্পের অনুকূলে যেমন তিনি আশা করেছিলেন তেমতি মোটেও হয়নি।
জর্জিয়াতে ২০২০ নির্বাচনে তাঁর কথমত অন্যায়ভাবে ভোট সংখ্যা প্রভাবিত করতে অস্বীকার করায় গভর্নর ব্রিয়ান কেম্পকে হেনস্তা করার দুষ্ট অভিপ্রায় ভেস্তে গেছে । ট্র্যাম্প সম্রতিত প্রার্থী প্রাক্তন সিনেটর ডেভিড পারদু (উধারফ চবৎফঁব) বিরাট ব্যবধানে হেরে গেছেন । একাই অবস্থা হয়েছে সেক্রেটারি অব ষ্টেট ব্রেড রাফফেন্সপারগার এর চেলেঞ্জার ট্র্যাম্পের লোক প্রতিনিধি জুডি হাইসের ও ।
এটর্নি জেনারেল ক্রিস কার সহজেই ট্র্যাম্প সমর্থিত এটর্নি জন গরডনকে পরাস্ত করতে সমর্থ হন । ট্র্যাম্পের সমর্থন নিয়ে বুশ গোষ্ঠীর টেক্সাস ল্যান্ড কমিশনার জর্জ পি বুশকে হটিয়ে দিতে সফলকাম হন টেক্সাস এর এটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটন । আরকান্সাস এ ট্র্যাম্প তাঁর প্রাক্তন প্রেস সেক্রেটারি সেন্ডারসকে গভর্নর পদে সমর্থন দিয়ে জিতিয়ে এনেছেন । অন্যত্র ট্র্যাম্প সমর্থিত প্রার্থীগণ তেমন সুবিধে করতে পারেনি । ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রগ্রেসিভ উপদলটি বরং ভাল অবস্থানে উঠে এসেছে ।
Posted ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh