ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ : | বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষ অথবা প্রাণীর সহজাত বুদ্ধিবৃত্তি বলতে আমরা যা বুঝি তার বিপরীতে যন্ত্রের ব্যবহার সঞ্জাত বুদ্ধি কৌশলকে বুঝানো হয়। ব্যক্তিগত কম্পিউটার-শেয়ারিং-কেন্দ্রিক শিল্প, ওয়েব জগতে বিপ্লবাতক পরিবর্ধন ও পরিবর্তন, ইউনিক্স বিপ্লব এবং লিনাক্স, ফেসবুক এবং গুগল এসবের সমান্তরালে প্রসারমান হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শিল্প। অধ্যয়নের বিষয় হিসেবে নোবেল বিজয়ী সমাজবিজ্ঞানী হার্বাট সাইমন প্রথম এ প্রত্যয়টি ব্যবহার করেন। ১৯৫৬ সালের পর থেকে বিজ্ঞানীদের, বিশেষ করে কম্পিউটার বিজ্ঞানে নিরন্তর গবেষণার মাধ্যমে এ প্রযুক্তিটির শ্রীবৃদ্ধি, পরিবর্তন ও আধুনিকায়ন ঘটছে বলতে গেলে নিত্য। স্টার্ট-আপ কোম্পানিগুলো ব্যবসা এবং প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে চলছে। এখন নতুন ধরনের বুদ্ধিমত্তা যা জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নামে পরিচিত তা নিয়ে তুমুল আলোচনা ও তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে । বলা হচ্ছে, এ অগ্রগতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুগের নবজাগরণ বা রেনেসাঁ। স্বর্ণযুগ আসতে নাকি এখনো অনেক বাকী। পারসোনাল কম্পিউটার বা পিসি অনেক বেশী উদ্দেশ্য সাধন করতে পারবে এর কল্যাণে। ক্লাউড, পিসি, এবং অন্যান্য পদ্ধতির কল্যাণে আমাদের উৎপাদন এবং সামথ্র্ অকল্পনীয় পরিমানে বেড়ে যাবে। তবে, এর ক্ষমতা, বিশেষত, অনিষ্টকারক প্রবণতাকে শক্ত ও সুচারুভাবে নিয়ত্রন ও শাসন করতে না পারলে ক্ষতিরর এবং অনৈতিক কাজের প্রবণতা সীমাহীন মাত্রায় বেড়ে যাবে। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে চ্যাটজিপিটি ChatGpt – Gererative Pretrained Transformers চালু করার ফলশ্রুতিতে প্রচুর চাকুরীজীবীর চাকুরিচ্যুত হওয়ার আশংকা নিয়ে বিভিন্ন মহল চিন্তা প্রকাশ করতে শুরু করেছে ।
ইন্টেল এর সিইও প্যাট্রিক জেলসিঙ্গার (Patrick Gelsinger) সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে বলেন, It is our job as technologist and a society to shape AI as a force for good. There must always be a scientific and data-driven basis for the government that guides the AI journey. We cannot let ourselves blindly follow economic and algorithmic innovations that run amok, দেখুন, টাইম ম্যাগাজিন, অক্টোবর ৯, ২০২৩, পৃষ্ঠা ৮)।
ডেমিশ হাসাবিস (Demis Hassabis) ডিপমাইন্ড (Deepmind) এর একজন প্রথম সারির আবিষ্কারক। এলন মাস্ক (Elon Musk) এর সাথে এক কথোপথনে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স মেশিনসমূহের অমানবিক এবং অনৈতিক কিছু সমস্যার কথা উত্তপন করলে মাস্ক বিচলিত বোধ করেন। এ সিস্টেম মানুষের মনন ও চিন্তার জগতকে অতিক্রান্ত করে এক ভিন্ন সত্ত্বায় নিয়ে যেতে পারে। তাঁর মতে, Unless we built in safeguards,— artificial-intelligence systems might replace humans, making our species irrelevant or even extinct. (প্রাগুপ্ত ৩০ পৃষ্ঠা)। মেশিন মানুষের বোধশক্তি বা কন্সাসনেস (human consciousness) কেঁড়ে নিলে বা বিলুপ্ত করে ফেললে মানব সংস্কৃতি, সভ্যতা রসাতলে যাবে এ চিন্তা মাস্ক এর মধ্যে প্রবল হয়ে ওঠে ২০১৪ সালের শুরুতে গুগল ডিপমাইন্ড কিনে নেন।
এলন মাস্ক দারুণ এক প্রতিযোগিতায় নেমে পরেন । মূলত গুগল এবং মাইক্রোসফট দুটির ক্লাউড এবং ই- সার্ভিসেস এর মাধ্যমে জে অচিন্তনীয় পরিমাণ ইনফরমেশন বে তথ্য পাওয়া সম্ভব তা অতিক্রম করার জন্য মাস্ক টুইটার কিনে নেন এবং নাম পরিবর্তন করে ঢ নাকে অভিহিত করেন । আর্টিফিশিয়াল ইন্তেলিগেন্সের চ্যাটবটের ডাটা তৈরি ও সংরক্ষণ ক্ষমতা সহস্র গুণেরও অধিক বেড়ে যায় । ওপেন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সেকে টেক্কা দিতে এলন মাস্ক ৬টি কোম্পানি, Telsa, SpaceX with its Starlink unit, Twitter, the Boring Co., Neuralink, and xAL প্রতিষ্ঠা করেছেন । আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স নামে অভিহিত তাঁর এই সম্মিলিত প্রযুক্তি মানুষের বোধ ও বিবেককে যন্ত্রদানবের খপ্পর থেকে কিছুটা হলে ও বাঁচাতে সমর্থ হবে এমন অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন এলন মাস্ক। (চলবে)
Posted ১২:৩২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh